1. info@provatferri.com : admin :
  2. provatferri.bd@gmail.com : স্টাফ রিপোর্টার : স্টাফ রিপোর্টার
শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:১২ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
ডেভিল মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত অপারেশন চলবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অপারেশন ডেভিল হান্ট: দ্বিতীয় দিনে গাজীপুরে গ্রেফতার অন্তত ১০০ ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাড়ি থেকে আলামত সংগ্রহ করেছে সিআইডি শ্রীলঙ্কায় দেশব্যাপী বিদ্যুৎ বিভ্রাট, বানরকে দায়ী করলেন মন্ত্রী জয়কে অপহরণ ও হত্যাচেষ্টা মামলা থেকে খালাস পেলেন মাহমুদুর রহমান গাজীপুরে হামলার ঘটনায় গুরুতর আহত ৫ জন ঢামেকে ভর্তি গাজীপুরে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় জড়িতদের বিচারের আওতায় আনা হবে বিএসএমএমইউয়ে নতুন নামের ব্যানার, বাদ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ৬৫৩১ জন প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ হাইকোর্টে বাতিল ধানমন্ডি ৩২ এসে এক নারী ও পুরুষের ‘জয় বাংলা’ স্লোগান, অতঃপর…

একযুগেরও বেশি সময় ধরে শিকলে বন্দি মেহনাজ

মোঃ নাইমুর রহমান, শেরপুর
  • আপডেট : মঙ্গলবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

অর্থ সংকটে চিকিৎসার অভাবে ১২ বছর ধরে শিকলবন্দি এতিম মেহনাজ (২০)। সে শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার ব্রিজপাড় এলাকার মৃত নূর মোস্তফা ও মৃত হাওয়া বেগমের ছয় সন্তানের মধ্যে সবার ছোট।

পরিবার জানায়, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়া অবস্থায় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে মানসিক প্রতিবন্ধী হয়ে যায় মেহনাজ। পরিবারটির আর্থিক অসচ্ছলতা জন্য ওর চিকিৎসা করা যায়নি।চিকিৎসকরা বলেছেন, সিজোফ্রেনিয়া নামে রোগে আক্রান্ত মেহনাজ। নির্দিষ্ট কয়েকটি হাসপাতালেই সম্ভব এই রোগের চিকিৎসা।

জানা গেছে, এক যুগেরও বেশি সময় ধরে তাকে ভাঙা ঘরে বেঁধে রেখেছে তার পরিবার। স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়ে কোনো লাভ না হওয়ায় বিশেষজ্ঞের পরামর্শ আর নেয়নি পরিবার।পরে অবস্থার অবনতি হলে পাবনা মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসা করা হয়। কিন্ত তাতে কোনো প্রতিকার মেলেনি। সাথে কেউ না থাকলেও সারা দিন একাই কথা বলেন মেহনাজ। যন্ত্রণা বাড়লে ব্যাপক চিৎকার করে।আবার ক্লান্ত হয়ে গেলে শুধু কথা বলে। কাছে গেলে মারধর করে। শিকল খুলে দিলে বাড়ি থেকে বের হয়ে হারিয়ে যায়। এসব বিব্রতকর অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে দীর্ঘ একযুগ ধরে মেহনাজকে শিকলে বেঁধে রেখেছে তার পরিবার। ডান পায়ে দীর্ঘদিন ধরে শিকল বেঁধে রাখায় পচন ধরেছে পায়ে।

এখন বাম পায়ে শিকল বেঁধে রাখা হয়েছে। অস্বাস্থ্যকর ভাঙা একটি ঘরে তাকে রাখা হয়েছে। বাবা-মায়ের মৃত্যুর পর দরিদ্র বড় ভাই আর ভাবিই তার একমাত্র ভরসা। প্রতিদিন খাওয়া গোসল সবই করাতে হয় বড় ভাই হাসানকে। আর্থিক সচ্ছলতা না থাকায় দুই বছর ধরে কোনো চিকিৎসা করানো যাচ্ছে না। এক ভাই নৈশপ্রহরী ও আরেক ভাই চা দোকানি। অন্য বোনেরা থাকেন স্বামীর বাড়িতে। পরিবার অত্যন্ত গরিব বলে তারা সবাই মানবেতর জীবন করে। তার উপর আবার মেহনাজের এই অবস্থা।
এলাকাবাসী বলছেন, নিতান্ত বাধ্য হয়েই পরিবার মেহনাজকে বেঁধে রাখতে বাধ্য হয়েছে। আর এভাবে চলতে থাকলে মেহনাজ কিছু দিনের মধ্যে মারা যাবে। সঠিক চিকিৎসা হলে হয়ত মেহনাজ বাঁচবে।

বড় ভাই হাসান বলেন, বাবা বেঁচে থাকা অবস্থায় পাবনা পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কোনো লাভ হয়নি। আমি নৈশপ্রহরীর চাকরি করে মাত্র পাঁচ হাজার টাকা বেতন পাই। আমার বড় ভাই চা বিক্রি করেন। আমাদের পক্ষে বোনের চিকিৎসা খরচ বহন করা প্রায় অসম্ভব। সমাজসেবা থেকে কিছু সহযোগিতা পেয়ে মেহনাজকে ওষুধ খাওয়ানো হচ্ছে। বোনটার জন্য দুশ্চিন্তা আমাদের সকল সময় কাঁদায়। কিন্ত নিরুপায় আমরা।

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক বাহাদুর শাহ মজুমদার বলেন, এটি একটি জটিল মানসিক রোগ। তবে দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসা পেলে এ রোগ সেরে ওঠে। সিজোফ্রেনিয়া নামের এই রোগের দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসা একমাত্র মানসিক হাসপাতালেই সম্ভব। তাই দ্রুত চিকিৎসা গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রাজীব সাহা।

তিনি আরও বলেন, আমাদের হাসপাতাল থেকে সমাজসেবার মাধ্যমে তাকে বিনামূল্যে ওষুধ প্রদান করা হয়। তার চিকিৎসার জন্য মানসিক হাসপাতাল প্রয়োজন। সুচিকিৎসা ও কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে কিছুটা উন্নতি করা সম্ভব। তবে দ্রুত চিকিৎসা করাতে পারলে উন্নতির হার বেশি।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২৩